জার্মানির পুলিশ দেশটির উত্তরাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে এক সিরীয় মানবপাচারকারী চক্রের সন্দেহভাজন প্রধানকে আটক করেছে। চক্রটির বিরুদ্ধে পোল্যান্ড হয়ে এক হাজারের বেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে জার্মানিতে নিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ৩২ বছর বয়সী ওই সিরীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। জার্মানির উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের ছোট শহর আয়েরৎসেনে সন্দেহভাজন বসবাস করছিলেন৷
অভিযানে গোয়েন্দা তদন্তের নেতৃত্ব দিয়েছে জার্মানির গ্যোরলিৎসের প্রসিকিউটর দপ্তর এবং তদন্তে সহায়তা করেছে ইউরোপীয় পুলিশ সংস্থা ইউরোপোল৷ পুলিশ জানিয়েছে, এই অভিযানে অংশ নিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ১০০ সদস্য।
চক্রটির আরো দুই সদস্যের বাড়িতে একই দিন তল্লাশি চালানো হয়। তারা দুজনও সিরীয় নাগরিক, যাদের বয়স যথাক্রমে ২৫ ও ২৯ বছর।
জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, চক্রটি এক হাজারের বেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে পোল্যান্ড থেকে জার্মানিতে পাচার করেছে৷ অভিবাসীদের বেশিরভাগই সিরিয়া ও ইরাকের নাগরিক।
তিনি আরো জানান, এই অভিবাসীরা এর আগে বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে পায়ে হেঁটে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকেন।
তদন্তকারীদের ধারণা, ২০২১ সাল থেকে এই মানবপাচারকারী দলটি অন্তত একশোটি পাচার পরিচালনা করেছে এবং অভিবাসী প্রতি সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ইউরো পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে থাকা সীমান্তে জার্মানি কঠোর নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে৷ এর পর থেকে প্রায় দুই হাজার ২০০ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফেসার।
পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যেখানে ৪০ হাজার এর মতো মানুষ অনিয়মিতভাবে জার্মানিতে ঢুকেছিল, সেখানে ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ১০ হাজারে।
চলতি বছর জার্মানির দায়িত্ব নিতে যাওয়া সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণকে তার সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার হিসাবে ঘোষণা করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে ঘটে যাওয়া কয়েকটি প্রাণঘাতী হামলায় বিদেশিদের সম্পৃক্ততা এবং উগ্র-ডানপন্থিদের নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসাও এর পেছনে কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ন্যান্সি ফেসারের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন রক্ষণশীল নেতা আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট৷ বাভারিয়ান রাজ্যের এই সিএসইউ নেতা অভিবাসন ইস্যুতে কড়া অবস্থানের পক্ষে।
মন্তব্য করুন