মাত্র তিন দিনে পাঁচশ জনেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী পৌঁছেছেন গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ ক্রিটে৷ রোববার (২৫ মে) গ্রিক কোস্টগার্ড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২২ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত অন্তত ৫৪৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ক্রিট দ্বীপে পৌঁছেছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রিক দ্বীপগুলোতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আগমন বেড়েই চলেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার (২৪ মে) পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন অভিযানে অন্তত ২৮০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন ১৩ জন।
এতে আরো বলা হয়েছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগই ছিলেন পুরুষ এবং তারা লিবিয়া থেকে গ্রিসের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।
অভিবাসীদের অনেকে জানিয়েছেন, এই সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে তাদের জনপ্রতি এক লাখ ৫০ হাজার থেকে দুই লাখ মিশরীয় পাউন্ড বা তিন থেক চার হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দিতে হয়েছে।
অভিবাসীদের মধ্য থেকে ২৪ বছর বয়সি একজন সুদানিকে সন্দেহভাজন মানবপাচারকারী হিসাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, লিবিয়ার তব্রুক উপকূল থেকে ক্রিট পর্যন্ত বিস্তৃত সমুদ্রপথটি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ কারণ, চলতি বছর এত বেশিসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী গ্রিসের অন্য কোনো দ্বীপে আসেননি।
ক্রিটের নৌ পুলিশ কর্মকর্তাদের ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে অন্তত পাঁচ হাজার ১০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী দ্বীপটিতে এসেছিলেন৷ চলতি বছর ইতিমধ্যে অন্তত চার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী এসেছেন।
তারা বলছেন, আবহাওয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে এই গ্রীষ্মে অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা আরো বাড়বে৷ ইউনিয়নটির ধারণা, ইউরোপে আসার অপেক্ষায় হাজারো মানুষ লিবিয়ার তব্রুকে অপেক্ষায় রয়েছেন।
এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, চলতি বছরের ১৮ মে পর্যন্ত নৌকায় করে মোট ১১ হাজার ৩০৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী গ্রিসে এসেছেন৷ তাদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ এসেছেন ক্রিট দ্বীপে।
গত বছর অন্তত ৫৪ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী সমুদ্রপথে গ্রিসে পৌঁছেছেন৷ ইইউর আশ্রয় বিধিমালা অনুযায়ী, যে সদস্য রাষ্ট্রে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা প্রথম পৌঁছান, সেখানেই তাদের শরণার্থী মর্যাদার জন্য আবেদন করতে হয়।
যুদ্ধ, দারিদ্র্য ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে গ্রিস এবং ইটালি হলো ইউরোপে ঢোকার প্রধান প্রবেশদ্বার৷ গ্রিস এবং ইটালি সম্মুখসারির দেশ হওয়ায় সেখানে আশ্রয় আবেদনের সংখ্যাও বেশি দেখা যায়।
ইইউজুড়ে শরণার্থীদের ন্যায্য বন্টনের আহ্বান জানিয়ে আসছে গ্রিস৷ তবে গ্রিসে আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর হওয়া শরণার্থীদের জার্মানিতে থেকে গ্রিসে ফেরত পাঠানোর বিরোধিতা করে আসছে এথেন্স।
মন্তব্য করুন