শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জার্মানিতে প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে, প্রভাব শ্রমবাজারে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৪ মে ২০২৫, ১৫:৩০
ছবি-সংগৃহীত

২০২৪ সালে জার্মানির মোট জনসংখ্যার মধ্যে অভিবাসনের ইতিহাস রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা ছিল দুই কোটি ১২ লাখ৷ সংখ্যাটি তার আগের বছরের তুলনায় চার ভাগ বেশি৷

দেশটির ফেডারেল পরিসংখ্যান অফিস বৃহস্পতিবার (২২ মে) এ তথ্যটি দিয়েছে৷ সংস্থাটি জানিয়েছে, এই সংখ্যাটি জার্মানির মোট জনসংখ্যার ২৫ দশমিক ছয় শতাংশ৷ অর্থাৎ দেশটিতে বসবাসরত মানুষের প্রতি চার জনের মধ্যে একজনের অভিবাসন ইতিহাস বা পটভূমি রয়েছে৷ 

অভিবাসনের মধ্যে দিয়ে ১৯৫০ সাল থেকে যারা জার্মানিতে আসতে শুরু করেছেন, তাদের বলা হচ্ছে প্রথম প্রজন্মের অভিবাসী৷ দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী হলেন তারাই, যাদের জন্ম অভিবাসী পরিবারে হয়েছে৷

প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক কোটি ৬১ লাখের মতো৷ যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১৯ দশমিক ছয় শতাংশ৷ এছাড়াও, তাদের সরাসরি বংশধরদের মধ্যে ৫২ লাখের মতো মানুষ জার্মানিতে বসবাস করছেন৷

পরিসংখ্যান অফিসের তথ্য বলছে, এছাড়াও জার্মানিতে জন্ম নেয়া ৪১ লাখ মানুষের বাবা এবং মায়ের মধ্যে অন্তত একজন অভিবাসী৷ তবে ‘আইনভান্ডেরুংসগেশিস্টে’ বা অভিবাসনের ইতিহাস রয়েছে এমন মানুষের হিসাবে তাদেরকে রাখা হয়নি৷ 

জার্মানিতে বসবাসরত ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সি মানুষের মধ্যে ৩৪ শতাংশের অর্থাৎ প্রতি তিন জনে একজনের অভিবাসনের ইতিহাস রয়েছে৷ তরুণ এবং কর্মক্ষম মানুষের মধ্যেই অভিবাসনের ইতিহাস রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে৷ ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সি মানুষের হিসাবে অভিবাসন ইতিহাস রয়েছে ১৪ শতাংশের৷ 

গত দশকে জার্মানিতে অভিবাসীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে৷ ২০১৫-২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ৬৫ লাখ মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসনের মধ্যে দিয়ে জার্মানিতে এসেছেন৷ তবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অভিবাসী এসেছে ইউক্রেন ও সিরিয়া থেকে৷

জার্মানিতে সবচেয়ে বেশি ৩১ শতাংশ অভিবাসী এসেছেন শরণার্থী পূনর্বাসন কর্মসূচি, আশ্রয় এবং আন্তর্জাতিক সুরক্ষার অংশ হিসাবে৷ কর্মসংস্থানের মধ্য দিয়ে এসেছেন ২৩ শতাংশ এবং পারিবারিক পুনর্মিলনের মধ্য দিয়ে এসেছেন ২১ শতাংশ অভিবাসী৷

ফেডারেল পরিসংখ্যান অফিস ২০২২ সালের আদমশুমারির ফলাফল এবং ২০২৪ সালের আদমশুমারির প্রাথমিক ফলাফলের উপর ভিত্তি করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে৷

তারপরও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিবাসীদের আনা ছাড়া জার্মানি তার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ধরে রাখতে পারবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা৷

গত বছরের ২৬ নভেম্বর বার্টেলসমান ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শ্রমবাজারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী ধরে রাখতে হলে ২০৪০ পর্যন্ত প্রতি বছর অন্তত দুই লাখ ৮৮ হাজার অভিবাসী কর্মীর প্রয়োজন হবে জার্মানিতে৷

জার্মানিতে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে৷ এর বিরূপ প্রভাব পড়তে যাচ্ছে জার্মান শ্রমবাজারে৷

গবেষণাটিতে বলা হয়েছে, শ্রমঘাটতির প্রভাব বেশ নাটকীয়ভাবে আঘাত করবে দেশটির অর্থনীতিকে৷ এমন অবস্থায় জার্মানি যদি অভিবাসীদের তাদের শ্রমবাজারে যুক্ত হওয়ার সুযোগ না দেয়, তাহলে ২০৬০ সালের মধ্যে চাহিদার তুলনায় কর্মী কমবে চার ভাগের এক ভাগ৷

বার্টেলসমান ফাউন্ডেশনের গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, ২০৪০ সালের মধ্যে জার্মানিতে কর্মীর সংখ্যা ১০ শতাংশ কমে যাবে৷ বর্তমানে জার্মানির শ্রমবাজারে যুক্ত আছেন চার কোটি ৬৪ লাখ কর্মী৷ তা কমে হবে চার কোটি ১৯ লাখ৷ এ অবস্থা বজায় থাকলে ২০৬০ সালের মধ্যে শ্রমশক্তি ২৫ শতাংশ কমে হবে তিন কোটি ৫১ লাখ৷

মন্তব্য করুন