মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

আপনার সন্তান খেলতে পছন্দ করে না কেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক
  ২৯ জুন ২০২৫, ১৮:৩৩
ছবি-সংগৃহীত

খেলা চলাকালীনই অসুস্থ। ম্যাচের মাঝেই আচমকা হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঘটনা কম নেই। বহু বার এমন ঘটনা ঘটেছে। ক্রিকেট খেলার মাঝে, ফুটবল খেলতে গিয়ে, ব্যাডমিন্টন খেলার মাঝে আচমকা হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঘটনা এ রাজ্যেই ঘটেছে একাধিক বার। 

মৃতদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যেই। কেন খেলতে গিয়ে আচমকা বিগড়ে যাচ্ছে হার্টের ছন্দ, কেনই বা কমবয়সিরা হৃদ্‌রোগের শিকার হচ্ছেন, তা জেনে রাখা ভাল। সন্তানকে যদি খেলোয়াড় বানানোর ইচ্ছা থাকে এবং প্রশিক্ষণে ভর্তি করতে চান, তা হলে আগে হার্টের কিছু পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি।

হার্টের সমস্যা কিন্তু এক দিনে আসে না। দীর্ঘ সময় ধরে একটু একটু করে হার্টের ছন্দে বদল আসে। যেহেতু ছোটদের হার্টের কোনও স্ক্রিনিং বা টেস্ট হয় না, তাই হৃদ্‌রোগের সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে কি না, তা বোঝার উপায় থাকে না। 

এই বিষয়ে চিকিৎসক দিলীপ কুমারের বক্তব্য, সব বাবা-মায়েদের জন্যই এই পরামর্শ যে, ছোটদের এই ধরনের প্রফেশনাল খেলাধূলায় পাঠানোর আগে অতি অবশ্যই কার্ডিয়ো টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। 

ইসিজি, ইকোকার্ডিয়োগ্রাম, স্ক্রিনিং টেস্ট, স্ট্রেস লেভেলের টেস্ট খুবই জরুরি। তা হলে বোঝা যাবে, হার্টের অবস্থা কেমন। হার্ট যদি শুরু থেকেই কমজোরি হয় তা হলে এই ধরনের পরিশ্রমের খেলাধুলা তার পক্ষে ঠিক হবে না। হার্ট কী অবস্থায় রয়েছে, কোনও ব্লকেজ আছে কি না, অ্যারিদমিয়ার সমস্যা বা হার্টের ছন্দে গোলমাল আছে কি না, তা বোঝার জন্য রুটিন কিছু পরীক্ষা করাতেই হবে।

এখনকার ছেলেমেয়েরা বাইরের খাবার খেতে বেশি পছন্দ করে। শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, জাঙ্ক ফুড খাওয়া, দীর্ঘ ক্ষণ বসে কাজ করা— এই সবই হার্টকে দুর্বল করে দিচ্ছে। তা ছাড়া অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস ছোট থেকেই ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’-এর কারণ হয়ে উঠছে। এটি এমন এক ধরনের শারীরিক সমস্যা, যাতে, বিপাকক্রিয়ার হার ধীরে ধীরে কমতে থাকে। হজমের গোলমাল থেকে নানা অসুখ মাথাচাড়া দেয় কম বয়সেই। 

শিশু ‘ট্রাঙ্কাল ওবেসিটি’-র শিকারও হয়। মেদ জমতে থাকে শরীরের নানা জায়গায়। অতিরিক্ত ওজন ছোটবেলাতেই ডায়াবিটিসের কারণ হয়ে ওঠে। বাবা-মায়েরা অনেক সময়েই ভাবেন, খেলাধুলা করলে সন্তানের মেদ ঝরবে, শরীর ঠিক থাকবে। তবে সে ক্ষেত্রেও সন্তান শারীরিক ধকল কতটা নিতে পারবে, তা আগে থেকে বুঝতে হবে। 

ছোট থেকেই যদি তলে তলে হার্টের পেশিতে মেদ জমতে থাকে বা হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে থাকে, তা হলে বেশি কায়িক পরিশ্রম হবে, এমন খেলা তার জন্য ঠিক নয়। আর যদি ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিসের মতো খেলাধূলায় নিয়মিত অংশ নিতে হয়, তা হলে বিপদ বাড়তে পারে। তাই আগে চিকিৎসা করিয়ে নেওয়া জরুরি। তা হলেই বিপদের ঝুঁকি কমবে।

মন্তব্য করুন