দাঁত ওঠার পরই সুন্দর রঙিন ব্রাশ কিনে সন্তানকে স্বাস্থ্যবিধি শেখানোর চেষ্টা করেন বাবা-মায়েরা। কিন্তু অনেকেই জানেন না, শিশুদের মুখের স্বাস্থ্যবিধি শুরু হওয়া উচিত দাঁত ওঠার আগে থেকেই।
আপনার সন্তানের দাঁত যাতে সুস্থ থাকে দীর্ঘ দিন, তার জন্য প্রচলিত সময়ের আগে থেকেই অভ্যাস শুরু করুন। একরত্তিদের মুখের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে বিশদে আলোচনা করলেন দন্ত্যচিকিৎসক প্রীতম সেনগুপ্ত।
দাঁত পরিষ্কার রাখা (ব্রাশ এবং ফ্লসিংয়ের মাধ্যমে), নিয়মিত দন্ত্যচিকিৎসকের কাছে যাওয়া এবং পর্যাপ্ত ফ্লোরাইড পাচ্ছে কি না, তা নজরে রাখাই দাঁত সুস্থ রাখার প্রকৃষ্ট উপায় বলে জানালেন প্রীতম সেনগুপ্ত।
তবে তার আগে জেনে নেওয়া উচিত, দাঁত পরিষ্কার করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, দাঁত পরিষ্কার করার (ব্রাশ এবং ফ্লসিং দিয়ে) মূল লক্ষ্য হল, জমে থাকা প্লাক সরিয়ে ফেলা। প্লাক হল ব্যাক্টেরিয়া (জীবাণু) দিয়ে তৈরি একটি স্বচ্ছ, আঠালো উপাদান। এই প্লাক থেকেই ক্যাভিটি হয়, মাড়ির রোগ হয়, গুরুতর হয়ে গেলে মাড়িতে ব্যথা, রক্তপাত, এমনকি দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু তার জন্য জানতে হবে, দাঁত পরিষ্কার করার উপায়গুলি।
সন্তানের দাঁত পরিষ্কার রাখার নিয়মগুলি কী কী?
১. সন্তানের প্রথম দাঁত ওঠার আগে থেকেই মুখের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাস শুরু হয়। প্রতি বার খাওয়ানোর পর একটি পরিষ্কার, হালকা ভেজা কাপড় দিয়ে মাড়ি পরিষ্কার করিয়ে দিতে হবে।
২. তিন বছরের কম বয়সি শিশুদের দিনে দু'বার ফ্লোরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার করে নরম টুথব্রাশ দিয়ে ২ মিনিট ব্রাশ করতে সাহায্য করুন।
৩. তিন বা তার বেশি বয়সের শিশুদেরও দিনে দু'বার ফ্লোরাইড টুথপেস্ট ব্যবহার করে দিয়ে ২ মিনিট ব্রাশ করতে সাহায্য করুন। খেয়াল রাখবেন, সে যেন টুথপেস্টটি মুখ থেকে ফেলতে শেখে, গিলে না ফেলে। দিনে এক বার ফ্লস করতে সাহায্য করুন।
৪. ১০ বছর বা তার বেশি বয়সের শিশুরা সাধারণত নিজেরাই ব্রাশ এবং ফ্লস করতে পারে। তাদের মনে রাখতে হবে, তারাও যেন দিনে দু'বার ২ মিনিট ধরে ব্রাশ করে এবং দিনে এক বার ফ্লস করে।
কখন দন্ত্যচিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত সন্তানকে নিয়ে?
প্রীতম সেনগুপ্ত বললেন, ‘‘আপনার সন্তানের প্রথম দাঁত ওঠার ৬ মাসের মধ্যে বা এক বছর বয়স হয়ে গেলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। অল্প বয়সে দাঁতের চিকিৎসককে দেখালে শিশু দাঁতের সমস্যা থেকে অনেকখানি মুক্ত থাকবে। বড় হয়ে যাওয়ার পরেও নিয়মিত দন্ত্যচিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
সাধারণত ৩ মাস অন্তর অথবা বছরে এক বার। আপনার শিশুর জন্য কোনটি সঠিক, তা আপনার দন্ত্যচিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করলেই জানতে পারবেন।’’
মন্তব্য করুন