আইফেল টাওয়ারসহ গর্ব করার মতো অনেক কিছুই প্যারিসের। নেই শুধু উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ঝাঁ চকচকে ট্রফিটা। মিলানের আবার অনেক কিছু নেই; কিন্তু ইতালির এই শহরে আছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দশ-দশটি ট্রফি। এসি মিলান সাতবার ও ইন্টার মিলান তিনবার ইউরোপসেরা হয়েছে।
ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে কাক্সিক্ষত ট্রফিটি নতুন কোথাও যাবে নাকি ফিরবে পুরোনো ঠিকানায়, তার নিষ্পত্তি হবে আজ। মিউনিখে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ব্লকবাস্টার ফাইনালে দেখা হচ্ছে পিএসজি ও ইন্টার মিলানের।
২০১০ সালে সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা ইন্টারের সামনে চতুর্থ শিরোপার হাতছানি। অন্যদিকে ইতিহাস গড়া থেকে মাত্র একটি জয় দূরে পিএসজি। ফাইনালে ইন্টারকে হারাতে পারলেই প্রথমবারের মতো ইউরোপসেরা হবে প্যারিসের ক্লাবটি। অতীতে জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ, নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও লিওনেল মেসির মতো মহাতারকাদের নিয়েও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে পারেনি পিএসজি।
সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১৯-২০ মৌসুমে ফাইনালে খেলা। সেবার বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ১-০ গোলে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। তারকাদের বিদায়ের পর তারুণ্যনির্ভর দল গড়ে প্রথম মৌসুমেই নতুন করে ইতিহাস লেখার সম্ভাবনা জাগিয়েছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। এরই মধ্যে ঘরোয়া ট্রেবল জিতেছে লুইস এনরিকের দল। এখন পিএসজির অপেক্ষা শেষ ধাপটি পেরোনোর।
ফাইনালের ক্যাচ লাইন হতে পারে তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতার লড়াই। পিএসজির স্কোয়াডের গড় বয়স চব্বিশের কম। দেম্বেলে, হাকিমি, ডনারুমা, বারকোলা, খভিচারা মৌসুমজুড়ে অসাধারণ ফুটবল উপহার দিয়েছেন। অন্যদিকে নাপোলির কাছে সেরি-এ লিগের রাজত্ব হারালেও ইউরোপে এবার বুড়ো হাড়ের ভেলকি দেখিয়েছেন ইন্টারের অভিজ্ঞরা। কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন ও সেমিফাইনালে হট ফেভারিট বার্সেলোনাকে হারানো দলটির মূল একাদশের গড় বয়স ত্রিশের বেশি।
একাদশে ৩৬ পেরোনো খেলোয়াড় আছেন তিনজন। মার্তিনেজ, ডামফ্রিসরা ফাইনালে খেলেছেন ২০২৩ সালেও। সেবার ম্যানসিটির কাছে হারলেও এবার ফেভারিট পিএসজির বিপক্ষে জয়ের ছবি আঁকছেন ইন্টার কোচ সিমোন ইনজাঘি, ‘আমরা জানি ফাইনালে ওঠার চেয়েও কঠিন ফাইনালে জেতা। তবে বার্সেলোনা ও বায়ার্ন মিউনিখের মতো দলকে হারিয়ে আসার পর জয় ছাড়া আর কিছু ভাববেন না আপনি।’
ওদিকে ইতিহাস গড়ার স্বপ্নে বিভোর পিএসজি কোচ এনরিকে, ‘প্রথমবার কোনো ট্রফি জেতা সব সময় কঠিন। তবে আমরা প্যারিসের প্রথম ক্লাব হিসাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে ইতিহাস গড়তে চাই।’
ফরাসি ক্লাবগুলোর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে শুধু মার্শেই। মজার ব্যাপার হলো, এই মিউনিখেই ১৯৯৩ সালের ফাইনালে ইন্টারের পড়শি এসি মিলানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মার্শেই। এবার কি তবে পিএসজির পালা!
মন্তব্য করুন