বিশ্ব যেন আবার কোনো অজানা দুর্যোগের মুখে দাঁড়িয়ে। গাজা উপত্যকার ধ্বংসস্তূপের ধোঁয়া এখনো মিলিয়ে যায়নি, ইউক্রেনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দ প্রতিদিনের বাস্তবতা, লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে আগুনের লেলিহান শিখা, এবং তাইওয়ান প্রণালীতে চীনা জাহাজের নজরদারি—সব মিলিয়ে বিশ্ব যেন এক বিস্ফোরণের ঠিক আগে দাঁড়িয়ে আছে। প্রশ্ন জাগছে—এ কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বাভাস?পশ্চিমা বিশ্ব নিজের অস্ত্রভাণ্ডার নতুন করে সাজাচ্ছে, ব্রিটিশ সরকার ‘ওয়ারটাইম প্রস্তুতি’র কথা বলছে, আর যুক্তরাষ্ট্র তাদের রাষ্ট্রদূতদের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। এই সংকেতগুলো আর হালকা করে দেখার সময় নেই।
বাংলাদেশ সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও এর ছায়া আমাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলবে—খাদ্য, জ্বালানি, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, এমনকি জাতীয় নিরাপত্তা পর্যন্ত।এই কলামে আমরা বোঝার চেষ্টা করবো—বর্তমান বিশ্ব-সংকটের গভীরতা কতটা? আমাদের জন্য কী সতর্কবার্তা বয়ে আনছে এসব যুদ্ধের আগুন? এবং বাংলাদেশ কীভাবে প্রস্তুত হতে পারে এই অনিশ্চিত সময়ের মুখোমুখি? এখানে ইরাক , ইসরায়েল-গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধের এর সর্বশেষ খবর নিয়ে আলোচনা করছি, তুর্কি সৈন্যদের দুর্ঘটনাজনিত নিহত: ইরাকের উত্তরাঞ্চলে একটি গুহার অনুসন্ধানে টার্কি সেনারা মিথেন গ্যাসে বিষক্রিয়া পেয়ে পাঁচ জন প্রাণ হারিয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আরও ১৯ জন আহত।
বেসামরিক হামলা ও ড্রোন হুমকি: কয়েকটি ইরাকি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা হয়েছে, যার ফলে রাডার সিস্টেম নষ্ট এবং ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীর মুখ্য কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন । আবাসন ও নিযুক্তি বিষয়ক ধারা: ইরাকে নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিপন্ন থাকলেও সরকার আইএসআইএস বন্দীদের নিয়ে বন্দিশিবিরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।
৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব: ইউএস, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে হামাস ১০টি জীবিত ও ১৮টি মৃত ফেরত দেবে এবং তদুপরি মানবিক সহায়তা প্রবেশ করবে; তবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়নি । নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফর ও দ্বিধা: নেতানিয়াহু আশা করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাধ্যমে একটি চুক্তি হতে পারে; তবে তিনি হামাসের কিছু দাবি ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।
বিমানবোমা ও হতাহতের সংখ্যা: গত ২৪-৪৮ ঘন্টায় গাজায় বিমান হামলায় ৩৮–৮০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে; এই অতিরিক্ত আক্রমণের তথ্য আল-জাজিরা ও অন্যান্য সূত্রে পাওয়া গেছে । মানবিক সংকট: গাজাতে তৈরি হচ্ছে দ্রুত এক ফটো-ক্ষুধা ও মানবিক সংকট পরিস্থিতি—শিশুদের মধ্যে মারাত্মকরূপে ক্ষুধা দেখা দিয়েছে; ইউনিসেফ ও ডাব্লিউএফপি সতর্ক ।মিসাইল ও ড্রোন হামলা বেড়েছে: ৩-৪ জুলাইের রাতের বৃহত্তম ড্রোন ও মিসাইল হামলা কিয়েভে চালানো হয় । নতুন রাশিয়ার সীমানা অভিযানের হুমকি: খারকিভ উপ–প্রদেশে নতুন রুশ অভিযান চাইতে পারে, এমন হুমকি দিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনাপ্রধান ।
ড্রোন হামলা ও অবকাঠামোর ক্ষতি: রাশিয়ার ভলগোগ্রাড ও ফার ইস্ট এলাকায় ড্রোন হামলায় ইলেকট্রনিক ও পাইপলাইন ক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্দি বিনিময়ের ধারাবাহিকতা: রাশিয়া–ইউক্রেন ম্যাচে চলতি বছরের জুনে আটটি বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হয়েছে । কৌশলগত সামরিক পদক্ষেপ: ডনেটস্কে রুশ বাহিনী পোক্রোভস্কের উত্তর-পূর্বে অগ্রসর হচ্ছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী বিকল্প প্রতিরক্ষা নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে । বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি বর্তমান প্রেক্ষাপটে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা কতটা? সম্ভাব্য যুদ্ধ অঞ্চল গুলি নিয়ে কোথা বলছি, ইসরায়েল–গাজা–ইরান–লেবানন চক্র: ইসরায়েলের সঙ্গে হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরানের উত্তেজনা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইসরায়েল যদি ইরানের অভ্যন্তরে বড় সামরিক অভিযান চালায় বা হিজবুল্লাহ পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া/চীনও জড়াতে পারে।
ইউক্রেন যুদ্ধ (রাশিয়া বনাম পশ্চিম): রাশিয়া ও ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে সামরিক সরবরাহ ও সীমান্ত হামলা ঘটায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি রাশিয়ার পক্ষ থেকে অতীতে এসেছে, যা উদ্বেগের কারণ। চীন–তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর: চীন যদি সামরিকভাবে তাইওয়ান দখলের চেষ্টা করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়তে পারে।তবে যুদ্ধ না হওয়ার সম্ভাবনার পক্ষে যুক্তি সমূহ আলোচনা করা হলঃ
পারমাণবিক প্রতিরোধ (MutuallyAssured Destruction)
রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র—সব দেশেরই পারমাণবিক অস্ত্র আছে। তারা জানে, যুদ্ধ মানেই যৌথ ধ্বংস।
অর্থনৈতিক আন্তঃনির্ভরতা
বৈশ্বিক বাণিজ্য এতটাই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ অর্থনীতিকে ধ্বংস করবে।
কূটনৈতিক চাপ
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জি-২০ ইত্যাদি সংস্থার মাধ্যমে শান্তি প্রচেষ্টা চালু রয়েছে।
অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ
অধিকাংশ রাষ্ট্রের জনগণ আরেকটি বৈশ্বিক যুদ্ধ চায় না। জনগণ শান্তির পক্ষে চাপ সৃষ্টি করছে।
এই দিকে যুদ্ধের জন্য আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে ব্রিটিশ ও মার্কিন সরকার।
১. জাতীয় নিরাপত্তা ও কৌশল পর্যালোচনা (জুন ২৪, ২০২৫) , ব্রিটেন তাদের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে ঘোষণা করেছে: “UK must actively prepare for the possibility of the UK coming under direct threat, potentially in a wartime scenario” এর অংশ হিসেবে হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ করা হচ্ছে পারমাণবিক অস্ত্র, ড্রোন ও দীর্ঘ-পরিসরের অফেন্সিভ সক্ষমতায় । আরও গৃহীত পদক্ষেপঃ F‑35A স্টেলথ ফাইটার স্কোয়াড্রন (পারমাণবিক সক্ষম) ক্রয়। সাবমেরিন ও জম্মুখ সেনা (armor‑clad army) সম্প্রসারণের ঘোষণা । ব্রিটিশ নীতি “পরবর্তী বৃহৎ যুদ্ধ‑পরিস্থিতি” —বিশ্বজুড়ে সংঘাত ছড়ালে সামরিক ও অন্দরসামরিক প্রস্তুতিতে গুরুত্ব দিয়েছে। মার্কিন সরকারঃ ১. মধ্যপ্রাচ্য সতর্কতা ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ ঃ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইরান–ইসরায়েল সংঘর্ষের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে পরীক্ষা করে দেখছে।
স্টাফ প্রত্যাহার শুরু করেছে বাগদাদে; বাহরাইন–কুয়েতে স্বেচ্ছায় প্রস্থানের পরামর্শ দিয়েছে । প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এড়িয়ে বলেন: “If U.S. intervenes, all‑out war” রিস্ক বাড়বে । ২. ইন্টেলিজেন্স‑লেভেলের পারমাণবিক আশঙ্কা ঃ সাবেক DNI টুলসি গ্যাববার্ড (ব্যক্তিগত মন্তব্যে): “নেতৃত্বের — closer to nuclear war than ever” । যদিও এটি ঐাজিক মন্তব্য, তবুও এই পর্যায়ে পারমাণবিক হুম-কথা উঠে যাওয়া উদ্বেগ বাড়িয়েছে।৩. গ্লোবাল জোট ও জ্বালানি সুরক্ষাঃ মার্কিন এবং উত্তর-আটলান্টিক ন্যাটো জোট শক্তি বাড়ানোর আহ্বান করছে—বিশেষত রাশিয়া ও চীনের সম্মিলিত ট্যাগেটে।
দিক
ব্রিটিশ একশন
মার্কিন একশন
মিলিটারি প্রস্তুতি
পারমাণবিক ড্রোন, F‑35A, সাবমেরিন—“wartime pace” উন্নয়ন
ব্যক্তিগত সর্তকতার উচ্চারণ ও কূটনৈতিক প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ
কূটনৈতিক টোন
সরাসরি “যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ” ভিত্তিক
“all‑out war হুমকি বাড়বে”—ইরানি হুমকির রেসপন্স হিসেবে
পারমাণবিক হুমকি
“নতুন যুগের হুমকি, পারমাণবিক জাকে গুরুত্ব”
ইনডিভিজুয়াল ইন্টেলিজেন্স সতর্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে
ব্রিটিশ সরকার তাদের National Security Strategy 202
5-এ সরাসরি লিখেছে: “যুদ্ধ নির্দেশনামূলক ধাপ গ্রহণ করা প্রয়োজন” । তারা অর্থ, প্রযুক্তি ও সক্ষমতার জোরালো বৃদ্ধি করছে।
যুক্তরাষ্ট্র ইরান–ইসরায়েল সংকটের দিকে সতর্ক, আন্তর্জাতিক কর্মীদের সরে নেওয়া শুরু, এবং পারমাণবিক সম্ভাবনায় তীব্র সতর্কবার্তা জারি করছে।
অর্থাৎ, বিশ্বের দুই দর্পণ কেন্দ্র—ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র—ই যুদ্ধ‑জ্বালানি সংকট ও পারমাণবিক প্রতিক্রিয়ার গুরুত্ব বোঝে এবং মহামূল্যবান প্রতিরোধ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ১. বিশ্বব্যাপী সতর্কবার্তাঃ পারমাণবিক অস্ত্রের ঝুঁকিঃ যুদ্ধ যদি পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে হয় (যেমন: যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন), তাহলে এর ধ্বংসাত্মক পরিণতি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে — শুধু যুদ্ধক্ষেত্রেই নয়, খাদ্য, পানি, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যব্যবস্থায়ও।
জ্বালানি ও খাদ্য সংকটঃ যুদ্ধ হলে মধ্যপ্রাচ্য বা ইউক্রেন অঞ্চলে তেল ও গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। এতে জ্বালানি দামে ভয়াবহ বৃদ্ধি হবে। কৃষিপণ্য (বিশেষ করে গম, ভুট্টা, তেলবীজ) সরবরাহ ব্যাহত হলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট ও মূল্যস্ফীতি দেখা দেবে। বৈশ্বিক মন্দা ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ঃ বড় ধরনের যুদ্ধ বিশ্ব বাণিজ্য ও স্টক মার্কেট ধ্বংস করে দিতে পারে। ফলে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বাড়বে। পণ্য রপ্তানিনির্ভর দেশ যেমন ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া ইত্যাদি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ২. বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য সতর্কতাঃ জ্বালানি সংকটঃ বাংলাদেশ মূলত আমদানি-নির্ভর। যুদ্ধ হলে তেলের দাম বেড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত ও লোডশেডিং বাড়বে।
শিল্পকারখানা ব্যাহত হবে, বিশেষ করে গার্মেন্টস। রপ্তানি বিপর্যয় (RMG খাত) ঃ ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে মন্দা দেখা দিলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (RMG) রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমে যেতে পারে, যা অর্থনীতিতে বড় আঘাত আনবে। খাদ্য মূল্যবৃদ্ধি ও আমদানি সমস্যাঃ খাদ্যপণ্য আমদানি ও পরিবহনে সমস্যা হলে চাল, গম, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম হঠাৎ বেড়ে যাবে। নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য বিপর্যয়কর হতে পারে। চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ বিঘ্নঃ বাংলাদেশ ওষুধের কাঁচামাল অনেকাংশে বিদেশ থেকে আনে (ভারত, চীন)। সরবরাহে বিঘ্ন হলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে।ভিসা ও অভিবাসী সমস্যাঃ মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সংখ্যা প্রচুর। যুদ্ধের ফলে অনেক দেশে ভিসা বন্ধ বা প্রত্যাবাসন ঘটলে রেমিট্যান্স প্রবাহ হুমকির মুখে পড়বে। ৩. সতর্কবার্তা ও প্রস্তুতি (বাংলাদেশ সরকারের জন্য)
জ্বালানি সংরক্ষণ
জরুরি জ্বালানি রিজার্ভ রাখা ও বিকল্প উৎস (বায়ু, সৌর শক্তি) ব্যবহার জোরদার করা।
খাদ্য নিরাপত্তা
খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো।
ভোক্তা সুরক্ষা
অসাধু মজুতদারির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে টাস্কফোর্স গঠন।
আন্তর্জাতিক কূটনীতি
বড় শক্তিগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে সংঘাতে না জড়ানো।
মানসিক ও স্বাস্থ্য সহায়তা
জনগণকে সচেতন ও মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখতে প্রচারণা চালানো।
বিশ্ব রাজনীতি এখন আগ্নেয়গিরির উপর বসে আছে। ছোট ছোট যুদ্ধের আগুন একদিন বৃহৎ বিস্ফোরণে রূপ নিতে পারে—যা কেবল রাষ্ট্রের সীমান্ত নয়, মানব সভ্যতাকেই কাঁপিয়ে দিতে পারে।
ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয়—যুদ্ধ কখনো সমাধান নয়, বরং নতুন সংকটের জন্ম দেয়। কিন্তু যখন ক্ষমতা, প্রতিশোধ আর আধিপত্যের খেলায় বিশ্বনেতারা তর্কে লিপ্ত থাকেন, তখন সাধারণ মানুষই হয় তাদের ভুলের সবচেয়ে বড় শিকার।
বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ সময়টি হতে পারে ভয়ংকর এক পরীক্ষার। সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর প্রশ্ন না থাকলেও, এর অর্থনৈতিক, মানবিক ও কূটনৈতিক চাপ আমাদের ঘাড়ে এসে পড়বে।
তাই এখনই সময়, সহজে বিভ্রান্ত না হয়ে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনায় দীর্ঘমেয়াদি সতর্কতা, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, এবং কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করার।
বিশ্ব হয়তো এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো—এ অনিশ্চয়তার মাঝেও নিশ্চিত প্রস্তুতি রাখা।
যদি আমরা সচেতন থাকি, দায়িত্বশীল হই, তাহলে হয়তো আমরা অন্তত আমাদের প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারবো এই আগাম বিপদের হাত থেকে।
লেখক: আজিজুল আম্বিয়া, সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক। email:[email protected]
মন্তব্য করুন