বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

আরাফাত ময়দান মুখর ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা’ ধ্বনিতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ০৫ জুন ২০২৫, ১৩:০২
ছবি-সংগৃহীত

আজ পবিত্র হজ। আরাফাতের ময়দানে থাকার দিন। সেলাইবিহীন শুভ্র কাপড়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সারা বিশ্ব থেকে সমবেত মুসলিমরা আজ সেখানে থাকবেন। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।’ 

অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার’-এ ধ্বনিতে আজ মুখর থাকবে আরাফাতের ময়দান। মিনায় মুসল্লিদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ৮ জিলহজ বুধবার সকাল থেকে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মঙ্গলবার রাতেই অধিকাংশ হাজি মিনার তাঁবুতে পৌঁছে যান।

হজযাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়াল্লিমরা আগের রাত থেকেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেওয়া শুরু করেন। হজযাত্রীরা মঙ্গলবার এশার পর মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় রওয়ানা হন।

মিনায় যাত্রার মধ্য দিয়ে হজ পালনের সূচনা হয়, যা শেষ হবে ১২ জিলহজ শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে। অন্যান্য দেশের হাজিদের সঙ্গে এবার বাংলাদেশের ৮৫ হাজার ১৬৪ হাজিও বুধবার সারা দিন মিনার তাঁবুতে অবস্থান করেছেন। বাংলাদেশি হাজিদের সেবায় মিনায় দায়িত্ব পালন করেছে ১৮টি টিম।

তাঁবুর এই শহর এদিন মুখরিত হয়ে উঠেছিল ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে। মুসল্লিরা সারা দিন ও রাত মিনায় কাটান ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মশগুল ছিলেন জিকির ও তালবিয়াতে। মিনায় জোহর, আসর, মাগরিব, এশা এবং পরদিন ফজরসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় সুন্নাত এবং সেখানে রাতযাপন করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।

আজ (৯ জিলহজ) সূর্যোদয়ের পর আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা করার কথা থাকলেও ভিড় এড়াতে আগের রাতেই হজযাত্রীদের নেওয়া শুরু করেন মুয়াল্লিমরা। মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে বিদায় হজের স্মৃতিবিজড়িত আরাফাতের ময়দান। মহান আল্লাহর কাছে হাজিরা দিয়ে আত্মশুদ্ধি, মাগফিরাত ও রহমত চাইতে আসা মুসলিমরা আজ এখানে সমবেত হবেন, যাকে হজের মূল অনুষ্ঠান বলা হয়। তিনদিকে পাহাড়ঘেরা প্রায় চার বর্গমাইল আয়তনের এ বিশাল সমতল মাঠের একপ্রান্তে জাবালে রহমত। অর্থাৎ রহমতের পাহাড়। ১৪শ বছর আগে এখানেই শেষ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) দিয়েছিলেন তার বিদায় হজের ভাষণ।

এই আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজ পূর্ণ হয় না। তাই হজে এসে যারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে এখানে আজ আনা হবে। এখানে মসজিদে নামিরা থেকে এ বছর হজের খুতবা দেবেন মসজিদুল হারামের প্রবীণ ইমাম শায়খ সালেহ বিন আবদুল্লাহ হুমাইদ। একই সঙ্গে মসজিদে নামিরাতে নামাজও পড়াবেন তিনি। 

তার প্রদত্ত সেই খুতবার বাংলা অনুবাদ করবেন সৌদি আরবে অধ্যয়নরত চার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান মাক্কী, মুবিনুর রহমান ফারুক ও নাজমুস সাকিব। তারা সবাই মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন। বাংলা ছাড়াও ২০টি ভাষায় অনুবাদ করা হবে হজের খুতবা।

আরাফাতে দিনের উচ্চ তাপমাত্রা বিবেচনায় হজযাত্রীদের সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নিজ নিজ তাঁবুতে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহমন্ত্রী তাওফিক আল-রাবিয়াহ।

সৌদির স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী ড. আব্দুল্লাহ আসির জানান, হজের জন্য এবার ৫০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশাসনিক কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন, যা পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে অনেক বেশি। তীব্র গরমজনিত অসুস্থতার চিকিৎসায় ৭০০টির বেশি হাসপাতালের শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারের চিকিৎসা সক্ষমতা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মন্তব্য করুন