শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার এখন গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ৩১ জুলাই ২০২৪, ২২:৫৯
ফাইল ছবি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে 'গণহত্যা' চালিয়ে সরকার এখন 'গণশত্রু' হয়ে যাওয়ায় তাদের অস্তিত্বের সংকট ক্রমেই গভীর হচ্ছে।

বিবৃতিতে 'ফ্যাসিবাদী' আওয়ামী লীগ সরকারকে অপসারণ করে সকল অন্যায়ের অবসান ঘটাতে রাজপথে চলমান ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সরকার ইতিহাসের নির্মম ও বর্বরোচিত হামলা ও গণহত্যা চালিয়ে গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, আন্দোলন দমন করতে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে শাস্তিযোগ্য।

ফখরুল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের মুখে দিশেহারা ও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সরকারের পতন কোনো কিছুই ঠেকাতে পারবে না, যতই নির্লজ্জভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় মানুষকে গ্রেপ্তার করুক না কেন।

তিনি সরকারের অন্যায়, অপকর্ম ও গণহত্যার বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে সোচ্চার হওয়ার জন্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশার মানুষের প্রশংসা করেন।

বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে গ্রেপ্তারদের নিঃশর্ত মুক্তি, কারফিউ প্রত্যাহার, সেনাবাহিনীকে তাদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, জমায়েতের ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, সরকার আইন, সংবিধান, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবিক মূল্যবোধ উপেক্ষা করে জনরোষ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য যা খুশি তাই করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ জনগণের সাংবিধানিক অধিকারগুলোকে নির্মমভাবে ক্ষুণ্ন করে দেশকে একটি স্বৈরাচারী ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।

তিনি অভিযোগ করেন, অনেক শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুম করা হচ্ছে। ‘অনেক বাবা-মা ও অভিভাবক তাদের সন্তান ও শিক্ষার্থীদের কোনো হদিস পাচ্ছেন না।’

ফখরুল বলেন, নিরাপত্তার নামে সরকার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমন্বয়কদের হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি করে রেখেছে। ‘কোনো আইনি ভিত্তি ছাড়াই এ ধরনের কর্মকাণ্ড নজিরবিহীন।’

তিনি বলেন, নির্লজ্জ সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের ব্যবহার করে গণহত্যা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পর রাষ্ট্রীয় শোকের নামে মায়াকান্না করছে।

‘তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই ভান প্রত্যাখ্যান করে গতকাল (মঙ্গলবার) নজিরবিহীন লাল ডিজিটাল প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে, যা জনগণের ঐক্য প্রদর্শন করেছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জনগণ হত্যাকারী সরকারের নিন্দা জানিয়েছে এবং তাদের রাষ্ট্রীয় শোকের ভানকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের 'মার্চ ফর জাস্টিস' কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে, লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার ও গ্রেপ্তার করেছে। ‘আমরা পুলিশের এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনে গোলাগুলির প্রমাণ পাওয়া গেলেও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলেও জানান ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। নিজেদের রক্ষার চেষ্টায় তারা প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করে বিরোধীদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।’

মন্তব্য করুন