বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. শামসুল আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন ড. শামসুল আলমকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির মতিঝিল জোনাল টিমের উপপরিদর্শক মো. ফেরদৌস আলম।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল হাসান ও নিজাম উদ্দিন জামিন আবেদন করে আদালতকে বলেন, তিনি (বিবাদী) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। দেশের জন্য অবদান রাখায় ২০২১ সালে একুশে পদক পেয়েছেন। তিনি কৃষি অর্থনীতিবিদ। কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী না। তার জ্ঞানকে কাজে লাগানোর জন্য বিগত সরকার তাকে প্রতিমন্ত্রী করেন। তাকে যে মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটিতে তিনি সন্দিগ্ধ আসামি। এ মামলার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করে আদালতকে বলেন, আমরা খুবই দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, উনি (বিবাদী) একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। একজন সম্মানিত ব্যক্তি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দেশের ফ্যাসিস্ট রেজিমকে সহযোগিতা করেছেন। সেনাবাহিনী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইজিপি, প্রধান বিচারপতি, চিকিৎসক হওয়ার পরও তাদের খায়েশ জেগেছে মন্ত্রী, এমপি হওয়ার। তাদের কেন রাজনীতিতে আসতে হবে? তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ওয়ান/ইলেভেনের সময় ডিজিএফআইয়ের একজন এসেছেন। তিনি আমার ছবিসহ সব নিয়ে গেছেন। আমাকে একটা কোর্টের দায়িত্ব দিতে চেয়েছেন। কিন্তু আমি সেখানে যাইনি। যদি যেতাম তাহলে আজ পিপি হতে পারতাম না। মানুষ আমাকে চাইবে, কিন্তু আমি কোথায় যাবো, কোথায় যাবো না, সেটা আমাদের নির্ধারণ করতে হবে।
গতকাল বুধবার (১৮ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে ড. শামসুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। মহাসমাবেশ পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়।
মন্তব্য করুন