ভারতশাসিত কাশ্মীরে কয়েক ডজন বুকস্টোরে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৬০০ বই জব্দ করেছে পুলিশ। এসব বইয়ের বেশির ভাগই জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা আবুল আলা মওদুদীর লেখা।
গেল শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কাশ্মীরের প্রধান শহর শ্রীনগরে অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় পুলিশ। সম্প্রতি অঞ্চলটিতে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে। ২০১৯ সালে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছে ভারতীয় সরকার। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে শ্রীনগর পুলিশ জানিয়েছে, ‘একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের মতাদর্শ প্রচারে গোপনে এসব সাহিত্য বিক্রি ও বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানতে পারি। পরে অভিযান চালিয়ে ৬৬৮টি বই জব্দ করা হয়েছে।’
বইগুলোর বেশিরভাগেরই প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লিভিত্তিক মারকাজি মাকতাবা ইসলামী পাবলিশার্স। জামায়াতে ইসলামীর ভারতীয় শাখার সঙ্গে এই প্রকাশনীর সম্পর্ক রয়েছে।
পুলিশ বলছে, ‘এসব বইয়ে আইনগত বিধিবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যাদের কাছে এগুলো পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জামায়াতে ইসলামীকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ওই একই বছরে কাশ্মীরের আংশিক স্বায়ত্তশাসনও বাতিল করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। এরপর থেকে অঞ্চলটিতে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে।
এই বই জব্দকে মানবাধিকার লঙ্ঘন আখ্যায়িত করে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বলেন, ‘এটা অন্যায় ও অসাংবিধানিক। ভারতে বৈধভাবেই এগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।’
‘যদি সরকারের কোনো নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগ থাকে, তবে যেকোনো তদন্তে সহযোগিতা করতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত,’ বলেন তারা। এই বই জব্দকে স্বেচ্ছাচারী ও অন্যায় পদক্ষেপ বলে আখ্যায়িত করেছে জামায়াতে ইসলামী।
সংগঠনটি জানিয়েছে, ‘পুলিশ যদি কোনো বৈধ তদন্তও করে, এই বই জব্দের ঘটনা, সেটার মধ্যেও পাড়ে না; বরং আমাদের কোণঠাসা করতেই তারা এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।’
এই বই জব্দের নিন্দা জানিয়েছেন কাশ্মীরের প্রধান ধর্মীয় নেতা ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই হাস্যকর। কারণ বর্তমান সময়ে এসে যখন ভাচ্যুয়াল জগতে সব তথ্য পাওয়া যায়, সেখানে তারা অভিযান চালিয়ে বই জব্দ করছেন। এটা অদ্ভুত ঘটনা।’
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই কাশ্মীর সংঘাত চলছে। পুরো অঞ্চলটিকে নিজেদের বলে দাবি করছে ভারত-পাকিস্তান। এদিকে স্বাধীনতাকামীরাও ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছেন।
মন্তব্য করুন