সম্প্রতি মিশরের রাজধানী কায়রোর তাব্বা এলাকার একটি বাসার দরজা ভেঙ্গে ৫ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে আটক করে কায়রো পুলিশ।
গতকাল দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেইসবুকে পেইজ ও বিভিন্ন গনমাধ্যমে আটকৃতদের নাম পরিচয়হীন ও অস্পষ্ট ছবি পোস্টের মাধ্যমে বলা হয়, কায়রোর নিরাপত্তা অধিদপ্তরের অধীনে নাসের সিটি থানা-৩ এ একটি অভিযোগ দায়ের করেন এক নারী। অভিযোগে তিনি জানান, কিছু ব্যক্তি এক বিদেশি নাগরিককে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গিয়ে *শারকিয়া প্রদেশের একটি বাসায় আটকে রেখেছে।
তদন্ত শেষে পুলিশ ভিকটিমের অবস্থান শনাক্ত করে এবং তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তাকে মুক্ত করে। অভিযানে চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। যাদের সকলেই ভিকটিমসহ একই দেশের নাগরিক। অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় স্থানীয় ও বিদেশি মুদ্রাসহ ভিকটিমের মোবাইল ফোন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে, ভিকটিমের সঙ্গে তাদের বিনিয়োগ বহির্ভূত বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে আর্থিক সম্পর্ক ছিল। ওই ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে একটি বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে তা নিজের ব্যক্তিগত খরচে ব্যয় করেন। ফলে,তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে। ভিকটিমও একই বক্তব্য দিলে তাকেও গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে এই গ্রেফতার নিয়ে দেশটিতে অধ্যায়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান,নাহিদ হাসান নামের এক নামধারী শিক্ষার্থী গ্রেফতারকৃত চার শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ব্যাবসার কথা বলে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা নেন। সেই টাকা ফেরত দিতে গরিমসি করায় নাহিদকে তাদের বাসায় আটকিয়ে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হয়। কোন এক সুযোগে নাহিদ তার মিশরীয় বান্ধবীকে ফোন করে তাকে উদ্ধার করতে পুলিশের সহায়তা চাইতে বলে। সে থানায় নাহিদ নামের এক বিদেশিকে অপহরণ করে আটকিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করলে পুলিশ নাহিদকে উদ্ধার করে সবাইকে থানায় নিয়ে যায়।
মিশরে অধ্যায়নরত বাংলাদেশি সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করেন,গত দুই বছর মিশরে ভিসা পদ্ধতি সহজ থাকা ও আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ নিয়ে অনেক ছাত্র নামধারী ব্যাক্তি এদেশে ডুকে বিভিন্ন অপরাধের সাথে জরিয়ে পরছে। তার মাঝে হুন্ডি ব্যবসা, মানব পাচার,স্বর্ন, ঔষধ, কসমেটিক, নানদুধ,সীসা, তামাক দ্রব্যসহ বিভিন্ন অবৈধ জিনিসপত্র পাচার অন্যতম।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ গ্রুপেও প্রতিদিন প্রকাশ্য কায়রো টু ঢাকা ফ্রি টিকেট দিয়ে স্বর্ন সহ অন্যান্য দ্রব্য নিয়ে যেতে লোভনীয় অফার দিতেও দেখা যায়।
এই লোভে পরে অনেকেই অবৈধ মাল সহ বিমান বন্দরে গ্রেফতার হন।
তারা মনে করেন, বাংলাদেশে বৈধ উপায়ে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা না করলে মিশর থেকে হুন্ডি ব্যাবসা বিলুপ্ত করা সম্ভব নয়। তারা মিশরে একটি বানিজ্যিক ব্যাংকের শাখা খুলতে বাংলাদেশে সরকারি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আটককৃত বিচার কাজ চলছে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের বহিষ্কার করা হবে বলেই অনেকের ধারনা।
মন্তব্য করুন