দেশের এমপিওভুক্ত সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠানে এতদিন মোট শিক্ষক পদের মধ্যে শহরাঞ্চলে ৪০ শতাংশ এবং মফস্বল অঞ্চলে ২০ শতাংশ পদে নারী প্রার্থী নিয়োগ বাধ্যতামূলক ছিল।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পদ (এন্ট্রি লেভেলে) শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের ক্ষেত্রে নারী কোটা থাকবে না।
তবে এমপিও নীতিমালায় বেসরকারি স্কুলের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও বেসরকারি কলেজের শরীর চর্চা শিক্ষক পদে নিয়োগের যোগ্যতা ও শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিলের এ আদেশ প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে কার্যকর হবে বলেও জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
এর আগে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এ সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়। মন্ত্রণালয় এ নিয়ে সভা করে। সেখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সবশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী- সব কোটা বাতিল করে শুধুমাত্র ৭ শতাংশ কোটা রাখা হবে। এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও ৭ শতাংশ কোটা প্রযোজ্য হবে।
১৯৯৯ সালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা চালু করা হয়। কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিশ্বব্যাংকের সুপারিশে ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নতুন আদেশ জারি করে তা বাধ্যতামূলক করে। এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অনগ্রসর এলাকায় নারী প্রার্থীর চরম সংকট দেখা দেয়। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলা ও উপজেলায় নারী কোটা শিথিল করে।
এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ২৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে সরকারি চাকরির সব গ্রেডেই (নবম-২০তম) ৭ শতাংশে কোটা রেখে বাকি ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
৭ শতাংশ কোটার মধ্যে রয়েছে- বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ।
মন্তব্য করুন