বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কুশিয়ারার ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধান চায় এলাকাবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ১০ মে ২০২৫, ১১:২৩

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দীর্ঘতম সড়কগুলোর অন্যতম খসরুপুর জিসি-বালাগঞ্জ সড়কের ফাজিলপুর এলাকায় কুশিয়ারার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে সড়ক ও সেতু। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে এই অঞ্চলের জনসাধারণ চরম বিপাকে পড়েছেন। সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে লাইন বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। এর ফলে তীব্র গরমের মাঝে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

ভাঙনের ফলে স্থানীয় পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ এলাকার বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

বড় এই ভাঙনের পর আরও ভাঙনের আশঙ্কায় স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিকসহ এলাকাবাসী জরুরি-ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

কুশিয়ারা নদীর তোড়ে সম্প্রতি খসরুপুর জিসি-বালাগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকদিন আগে ওই সেতু এলাকায় ফাটল দেখা দেয়। বুধবার সকালে ভেঙে পড়ে সড়কের একাংশ এবং এর ওপর নির্মিত সেতুটি। প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক দিয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর পর্যন্ত যোগাযোগ সংযুক্ত রয়েছে।

ভাঙনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মামুনুর রশীদ, উপজেলা প্রকৌশলী মুহিবুল্লাহ, স্থানীয় পৈলনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ভাঙন দেখা দিয়েছিল গত বছরের নভেম্বর মাসে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলার প্রস্তাব দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে কয়েকদিন আগে কেবল মাটি ও পলিব্যাগ দিয়ে ভাঙনের স্থানগুলো ভরাট করে দেওয়া হয়। কালভার্ট ও সড়ক রক্ষায় জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় কয়েকদফা সংবাদও প্রকাশিত হয়। পরে গত ২৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার সিলেটের উপপরিচালক সুবর্ণা সরকার স্থানটি পরিদর্শনেও আসেন, কিন্তু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় শেষমেষ শেষ রক্ষা হলো না রাস্তা ও কালভার্টের।

স্থানীয়রা বলেন, সড়কটিতে বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন উপজেলা ও জেলা সদর এবং বিভিন্ন হাটবাজারে চলাচল করে থাকেন। ব্যবসায়ীরা উপজেলা সদরের বালাগঞ্জ বাজার থেকে মালামাল পরিবহন করে থাকেন। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় অনেক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সড়কপথে চলাচল করতে না পেরে অনেকে বিকল্প হিসেবে পথ না থাকায় যাতায়াতে বিপদে পড়ছেন।

ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধান চায় এলাকাবাসী। কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী ভাঙন রক্ষায় পাউবোকে বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে তারা।

এ ব্যাপারে পূর্ব পৈলনপুর ইউপি চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি ফাজিলপুরসহ এই এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হলে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। এরপরও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বড় ধরনের এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় হামছাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় আরও ভাঙনের আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আরও ভাঙনের প্রতিরোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বালাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ওসমানীনগরের শেরপুর পর্যন্ত দীর্ঘ এই সড়ক যোগাযোগ পুনর্স্থাপনের মাধ্যমে দুর্ভোগ লাঘবে আমরা জোর চেষ্টা করছি।’

মন্তব্য করুন