বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

বিএডিসির পাট বীজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:০৬

পাটের জীবনকাল বেশি, লম্বা, পেঁচিয়ে যাওয়া ও ফলন কম হওয়ার কারণে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার পাট চাষিরা সরকারি বিএডিসির দেওয়া পাট বীজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। জমিতে চাষ করছেন না সরকারের দেওয়া বিএডিসির বীজ। 

বিকল্প হিসেবে চাষিরা ঝুঁকে পড়েছেন এলসির মাধ্যমে আসা ভারতীয় সেবায়ন জে আর ও ৫২৪, চক্র মার্কা জে আর ও ৫২৪, ও শঙ্খ মার্কা পাটের বীজের দিকে।

এ মৌসুমে উপজেলায সর্বমোট ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার পাট চাষিরা সরকারিভাবে উপজেলা থেকে দুইটি মাধ্যমে পাটের বীজ ও রাসায়নিক সার পেয়ে থাকেন। প্রথমত উপজেলা কৃষি অফিস, দ্বিতীয় উপজেলা পাট অধিদপ্তরের অধীনে পাট অফিস থেকে।

তথ্যমতে, এই মৌসুমে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এক কেজির ১ হাজার ৫৩০ প্যাকেট ও পাট অফিস থেকে ২ হাজার ৪০০ প্যাকেট বীজ চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলার কমলাপুর গ্রামের কৃষক জামাল মোল্লা ও ঘাসিয়ারা গ্রামের বক্কার মোল্লার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সরকারি বিএডিসির পাট বীজ জমিতে বপন করলে পাট দ্রুত বেড়ে অনেক লম্বা হয়ে যায় এবং লাল হয়ে যায়, যা অত্যন্ত নরম এবং পাটের সঙ্গে পাট পেঁচিয়ে যায়। 

আমরা সাধারণত যে সময় পাট কাটি সে সময় পাট কাটলে এর ফলন কম হয়। পাট কাটতে অনেক ঝামেলা হয়, যেকারণে আমরা জমিতে এ পাট বীজ বপণ করি না। যারা উপজেলা থেকে এ বীজ আনে তারা শুধুমাত্র রাসায়নিক সার পাওয়ার জন্য।

এ ব্যাপারে উপজেলার একজন সচেতন কৃষক গোলাম আলীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, প্রতিবছর বিএডিসির কৃষি মন্ত্রণালয় ও পাট অধিদপ্তর থেকে চাষিদের জন্য কোটি কোটি টাকার যে পাটবীজ বিতরণ করা হয়, তা চাষিদের কোনো কাজেই আসছে না। ব্যাপারটি ভেবে দেখার সময় এসেছে।

এ ব্যাপারে কাদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন খান জানান, সরকারি বিএডিসি থেকে যে পাট দেওয়া হয় সেটার প্রতি কৃষকদের অনীহা রয়েছে। এ মৌসুমে সরকারি বীজ নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হলেও কিছু কৃষক এসেছে। বাকি বীজের প্যাকেট গোডাউনে পড়ে আছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা জানান, বিএডিসির দেওয়া এ পাট বীজের জীবনকাল বেশি। অন্যান্য পাটের জীবনকাল সাধারণত ৯০ থেকে ৯৫ দিন হয়ে থাকে। আমরা বিএডিসি থেকে সরকারি যে বীজ দিয়ে থাকি সেটি জীবনকাল ১২০ থেকে ১২৫ দিন হয়ে থাকে। যে কারণে হয়তোবা চাষিরা এ বীজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

উপজেলা পাট কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন জানান, এ বীজের প্রতি চাষিদের অনীহার কারণ যে এটি বপণ করলে অন্যান্য পাটের তুলনায় আশ শক্ত হতে বেশি দিন সময় লাগে। 

চাষিরা তাদের জমিতে অন্য ফসল ফলানোর জন্য তাড়াতাড়ি পাট কেটে ফেলে। যে কারণে এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যদি সময় মতো পাট কাটা যায়, তাহলে অন্য পাটের তুলনায় এর ফলন বেশি হবে। এ ব্যাপারে চাষিদের নিয়ে আমারা কর্মশালা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা চাষিদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি বিএডিসি থেকে যে পাটবীজ পাট চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হয়—তা চাষিরা বপণ করে না। ঘরেই রেখে দেন। আর প্রণোদনা হিসেবে যে সার পাওয়া যায়—তা অন্য জমিতে ব্যবহার করা হয়।

মন্তব্য করুন