বিগত কয়েক দশকে ঢাকার গাছপালার পরিমাণ কমেছে অস্বাভাবিকভাবে। তবে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা, যা বায়ু দূষণের অন্যতম উপাদান কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
এসব কারণে ঢাকা প্রায়ই দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষে থাকে। তবে আজ সকালে ঢাকার বাতাসের মানে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) সকাল ৮টা ৪৪ মিনিটে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ৭৯। আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী যা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ।
কর্মব্যস্ত শহরটির মানুষ; যারা সকাল হতেই ছোটে নিজ নিজ কর্মস্থলে কিংবা যারা এককাপ চা নিয়ে হয়তো একটু বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিতে এসে ব্যালকনিতে দাঁড়ান, তারা আজ চাইলে একটু প্রাণ ভরে শ্বাস নিতেই পারে।
সাধারণত বৃষ্টি শুরু হলে বাতাসের মানে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। গতকাল (রবিবার) সকালে রাজধানীর বেশকিছু জায়গায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হওয়ার পর দুপুরের দিকে শহরটির বাতাসের একিউআই স্কোর ৫৬ তে নেমে আসতে দেখা গেছে।
একিউআই স্কোর নিচের দিকে নেমে আসার এই ধারা অব্যাহত থাকলে ঢাকার বাতাসও ‘ভালো’ হয়ে উঠতে পারে।
কারণ কণা দূষণের একিউআই মান যখন শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তখন তাকে ‘ভালো’ বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
একিউআই সূচক ৫১ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ এবং ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সূচক ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এখানকার বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে বেশি অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের ফলে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার ও শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
মন্তব্য করুন