বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

মানুষ কি আসলে তার জীবনে কিছু পায়?

সিরাজুল মুস্তাকিম পিয়াল, এস্তোনিয়া
  ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:০৮

মানুষের জীবনের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝে থাকে বিস্তর ফারাক। সেই শূন্যতা পূরণ করতে গিয়ে মানুষ কাটিয়ে দেয় পুরো একটি জীবন। তবুও, সমীকরণটি কোনোদিন মেলে না, এই অসম মেলবন্ধনের ভারেই মানুষ কখনো হতাশ হয়, কখনো নিঃসঙ্গতায় ডুবে যায়। 

কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীদের জীবনে এই নিঃসঙ্গতার ছায়া আরও গভীর। কারণ, তাদের জীবন অনুভূতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। তারা অনুভব করেন তীব্র ভালোবাসা, অস্বীকৃতি, আশার জ্বালা কিংবা নিরাশার অন্ধকার। আর এই অনুভূতির গভীরতাই তাদের সৃষ্টিশীলতার শক্তি, কিন্তু এর একটি অন্ধকার দিকও আছে তা হল তীব্র নিঃসঙ্গতা। 

এই নিঃসঙ্গতার প্রভাব তাদের জীবনের গল্পে বারবার ফিরে আসে। যেমন ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ। তার রঙের ক্যানভাস ছিল যতটা উজ্জ্বল, তার জীবনের রাত ছিল ঠিক ততটাই নিকষ কালো। এক নির্জন রাতে তিনি ছবি আঁকতে আঁকতে নিজের বুকেই গুলি চালান। তার ক্যানভাস অসম্পূর্ণ রয়ে যায়, আর তার জীবন শেষ হয় এক গভীর দুঃখের মধ্যে। 

তেমনি এডগার এলান পো। যিনি ভয়, মৃত্যু আর মেলানকোলিয়ার গল্প লিখে অমর হয়েছিলেন। কিন্তু এক শীতের সকালে, তাকে পাওয়া গেল পার্কের একটি বেঞ্চে, নিঃসঙ্গ এবং মৃত। কিংবা জীবনানন্দ দাশ, যিনি তার কবিতায় যতটা প্রকৃতির রূপ এঁকেছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি নিঃসঙ্গতা বয়ে বেড়িয়েছেন। একদিন সেই নিঃসঙ্গতা তাকে নিয়ে থামল ট্রামলাইনের পাশে।    

তাদের সবার জীবনের গল্প যেন একই রকম। চাওয়ার গভীরতা আর অনুভূতির প্রখরতা তাদের ঠেলে দিয়েছে এক ভয়াবহ অন্ধকার জগতে দিকে। 

কবি সাহিত্যিকদের সৃষ্টির আনন্দের চেয়ে জীবনের নিঃসঙ্গতার ভার অনেক বড়। শেষ পর্যন্ত সেই ভার থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র মৃত্যু। জীবন আসলে একটি অসম অংক, যার উত্তর খুঁজতে গিয়ে মানুষ একদিন হারিয়ে যায়।

মন্তব্য করুন