কুমিল্লার মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের ব্যপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ৩৫জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ জন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ৩০ জুন বুধবার বিকেলে মুরাদনগর সদর উপজেলায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। একই দিন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে উপজেলা ছাত্রদল।
মিছিলশেষে উপজেলা সদরের আল্লাহ চত্বরে আসিফ অনুসারীরা প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করেন। এ সময় সমাবেশস্থলের অদূরে বিএনপি অফিসের সামনে দলটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সমাবেশস্থল লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে বেশ কয়েকটি ইটপাটকেল ছোড়ার পর সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয় । সংঘর্ষ শুরু হলে উভয় পক্ষের কর্মীদের লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালাতে দেখা যায়। সংঘর্ষে ৬ সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন। স্টার নিউজের কুমিল্লা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মারুফ, খোলা কাগজের শাহ ইমরান, বার্তা ২৪ এর মহিন নাসের খান রাফি, সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মুন্না, মাহফুজ আনোয়ার সৌরভ ও এসএ টিভির ক্যামরাম্যান মো. বাপ্পি। সংঘর্ষের পরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হামলার আহতদের মধ্যে ৬ জনকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং বাকিদের স্থানীয় ও কুমিল্লা জেলা সদরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক ও উপজেলা এনসিপির তত্ত্বাবধায়ক মিনাজুল হক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, উপদেষ্টার আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে আমাদের বিক্ষোভ মিছিলটি শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু বিএনপির লোকজন অতর্কিত আমাদের ওপর হামলা চালায়। বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া দিয়েছে। যার ভিডিও আছে। এ সময় আমাদের প্রায় অর্ধশতাধিক সমর্থক আহত হয়েছেন।
তবে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছাত্রদলের ব্যানারে আমাদের একটি মিছিলের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু এনসিপি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এসে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে বিএনপির ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে ওমর উল্লাহ নামে যুবদল কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
কামাল উদ্দিন আরো বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সহায়তায় মামলা করার এটি একটি কৌশল।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আমিন কাদের খান জানান, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সংঘর্ষের ঘটনার পরপর উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো পক্ষ থানায় মামলা করেনি।
মন্তব্য করুন