বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

লন্ডনে ‘কালের অভিজ্ঞান’ গবেষণা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

আজিজুল আম্বিয়া, লন্ডন থেকে
  ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫:৫১
ছবি-সংগৃহীত

ইস্ট লন্ডনের   ভ্যালেন্স রোডে অবস্থিত বাংলার স্বাদ রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হলো এক অনন্য গবেষণা গ্রন্থ ‘কালের অভিজ্ঞান’–এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। স্থানীয় সরকারের সার্কেল পদ্ধতি ও সরপঞ্চ ব্যবস্থার ইতিহাসভিত্তিক এই গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক মতিয়ার চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গ্রন্থের সম্পাদনা পর্ষদের সদস্য লেখক-গবেষক শাহ আতিকুল হক কামালী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও গবেষক দেওয়ান গৌস সুলতান। মূল আলোচনায় অংশ নেন গবেষক ও বহুগ্রন্থ প্রণেতা ফারুক আহমদ, ইতিহাসবিদ ডা. গিয়াস উদ্দিন আহমদ এবং বাংলাদেশ থেকে আগত কবি হাসিদা মুন।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ড. আনসার আহমেদ উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন গ্রন্থ সম্পাদক মতিয়ার চৌধুরী। গ্রন্থ পাঠ পর্বে অংশ নেন বাচিক শিল্পী মুনিরা পারভিন, কবি স্মৃতি আজাদ এবং সাংবাদিক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া।

আলোচনায় আরও অংশ নেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক মেয়র আকিকুর রহমান, রাজনীতিক শাহ জাহান আহমদ, ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সেক্রেটারি মিজানুর রহমান মিরু, সাংবাদিক বাতিরুল হক সরদার, তরুণ গবেষক দেলওয়ার রহমান চৌধুরী, কবি এডভোকেট মুজিবুল হক মনি, রাধারমন উৎসবের প্রবর্তক জোবায়ের আহমদ হামজা, এম. এ. মতিন, অধ্যক্ষ সাহেদ রহমান, কবি আজিজুল আম্বিয়া, কামরুল আই রাসেল, সেজু মিয়া, নারী নেত্রী আনজুমান আরা আঞ্জু, এডভোকেট সফিক উদ্দিন আহমদ, কবি নোমান আহমদ প্রমুখ।

গ্রন্থটিতে সিলেট বিভাগের মোগল আমল থেকে পাকিস্তান শাসনামলের (১৯৫৮ সাল পর্যন্ত) স্থানীয় সরকারের সার্কেল ও সরপঞ্চ ব্যবস্থার ওপর গবেষণাভিত্তিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সিলেট বিভাগের ১২০ জন সরপঞ্চ ও সহকারী সরপঞ্চের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও কর্মকাণ্ডের বিবরণ, তৎকালীন পরগনা ব্যবস্থার ঐতিহাসিক দলিল এবং মোগল সম্রাট আকবরের আমলের রাজস্ব জিলা সম্পর্কিত তথ্য।

বিশেষভাবে আলোচকরা উল্লেখ করেন, নবীগঞ্জের ৩৯নং সার্কেলের দুই ভাই সরপঞ্চ শ্রীমান সনাতন দাস ও শ্রীমান দীননাথ দাসের জীবন ও কর্মকাণ্ড নিয়ে রচিত অংশটি এ গ্রন্থের অন্যতম মূল্যবান সংযোজন।

গ্রন্থটির ভূমিকায় প্রবন্ধ লিখেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান ড. শরদিন্দু ভট্টাচার্য। সম্পাদনায় সহায়তা করেছেন সাংবাদিক-গবেষক শাহ আতিকুল হক কামালী, কবি মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, সামসুল আমিন, সংগঠক জার্নেল চৌধুরী, গীতিকার মুজিবুর রহমান মুজিব ও লেখক রত্নদীপ দাস রাজু। 

গ্রন্থে অবদান রেখেছেন সিলেটের বর্ষীয়ান সাংবাদিক আল আজাদ, গবেষক মনোজ বিকাশ দেবরায়, মুকুন্দ্র চন্দ্র দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্র চন্দ্র দাস এবং শিশু সাহিত্যিক পৃথীশ চক্রবর্তি।

সিলেটের খ্যাতনামা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান গাঁঙুড় প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটির প্রকাশক অসীম সরকার।

‘কালের অভিজ্ঞান’– শব্দতাত্ত্বিক দিক থেকেও একটি তাৎপর্যপূর্ণ নাম – যেখানে ‘কাল’ মানে সময় এবং ‘অভিজ্ঞান’ মানে নিদর্শন। নামটি যথার্থই ফুটিয়ে তুলেছে গ্রন্থটির মূল সত্তা— একটি সময়ের নিদর্শন।

এই গবেষণা গ্রন্থটি সিলেটের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের বিবর্তন নিয়ে আগ্রহী গবেষকদের জন্য একটি অত্যন্ত মূল্যবান দলিল হয়ে উঠবে বলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

মন্তব্য করুন