বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধী এটিএম আজহারের মুক্তির প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক প্রগাঢ় ও জোরালো বিক্ষোভ সমাবেশ। পূর্ব লন্ডনের ঐতিহাসিক আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মুক্তিযুদ্ধপ্রেমী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
‘হৃদয়ে ৭১’ (71@Heart) নামক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান অংশগ্রহণকারীরা। সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে সমাবেশের সূচনা হয়।
অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় গণসঙ্গীত, কবিতা পাঠ এবং একটি প্রতিবাদী পথনাটক, যার মাধ্যমে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এটিএম আজহারের ঘৃণ্য ভূমিকা ও তার মুক্তিকে ঘিরে গভীর ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
কবিতা পাঠে অংশ নেন বিশিষ্ট কবি মুজিবুল হক মনি, মুর্শিদ উদ্দিন আহমদ, গোলাম রসুল, সালমা বেগম প্রমুখ। এই অংশটির পরিচালনায় ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান। কবিদের কণ্ঠে উচ্চারিত প্রতিবাদী কবিতাগুলো যেন ফিরে নিয়ে যায় সেই রক্তক্ষয়ী অতীতে, যেখানে রাজাকার আজহারসহ যুদ্ধাপরাধীরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছিল।
সমাবেশের অন্যতম আকর্ষণ ছিল প্রতিবাদী পথনাটক। নাটকের রচনা ও নির্দেশনা দেন কবি মুজিবুল হক মনি। অভিনয়ে অংশ নেন দেওয়ান গৌস সুলতান, শেখ নুরুল ইসলাম, সামসুদ্দিন আহমদ, ফারুক উদ্দিন, অসীমা দে, সামসুল সুমেল, অনামিকা মিটু ও মুর্শিদ উদ্দিন আহমদ। নাটকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়— “যুদ্ধাপরাধীদের কোনো ক্ষমা নেই, তাদের বিচার হতেই হবে।”
গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী হিরক, যাঁর নেতৃত্বে সংগীত পরিবেশনা উপস্থিত সকলকে আন্দোলনের চেতনায় আরও উজ্জীবিত করে তোলে।
‘হৃদয়ে ৭১’-এর কর্ণধার গৌস সুলতান বলেন,
“এই প্রতিবাদ এখানেই শেষ নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। ১৯৭১-এর শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না।”
সমাবেশের শেষে অংশগ্রহণকারীরা এক কণ্ঠে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁরা বলেন,
“ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে এবং সত্যের পক্ষে লড়াই চলবে অব্যাহতভাবে।”
মন্তব্য করুন