শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
জাতীয়প্রবাস বাংলাঅপরাধবাণিজ্যরাজনীতিঅন্যান্যসারাদেশমতামতস্বাস্থ্যফিচাররাজধানীপাঠকের কথাআবহাওয়াশিল্প-সাহিত্যগণমাধ্যমকৃষি ও প্রকৃতিইসলামবৌদ্ধহিন্দুখ্রিস্টানআইন-বিচারবিবিধআপন আলোয় উদ্ভাসিতবেসরকারি চাকুরিসরকারি চাকুরি Photo Video Archive

শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস চুয়াডাঙ্গাবাসীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  ১৩ মে ২০২৫, ১১:৫৪

চুয়াডাঙ্গায় টানা তাপদাহের কারণে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ভ্যাপসা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু ও বয়স্করা। সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া, শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন।

চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তীব্র গরমের কারণে ডায়রিয়া, পানিশূন্যতা ও গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে হাসপাতালে।

সোমবার (১২ মে) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪১ শতাংশ। এর আগের দিন, রোববার একই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া শনিবার এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ জেলায় রেকর্ড করা হয়।

প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরমে হাপিয়ে উঠেছে মানুষসহ প্রাণিকুল। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে বের হলেও বিপাকে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১৩ মের পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, চলমান তাপপ্রবাহ সপ্তাহজুড়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র অবস্থায় রয়েছে। তবে দু’এক দিনের মধ্যে বৃষ্টির দেখা মিলবে।

চুয়াডাঙ্গায় ভ্যাপসা গরমে হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ

এদিকে এই গরমে শিশু ও বয়স্করা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ডায়রিয়া, শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত চার দিনে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আড়াইশোর বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। মেডিসিন ওয়ার্ডে স্ট্রোক ও গরমজনিত অসুস্থতায় ভর্তি হয়েছেন প্রায় ২০০ জন। শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে তিনশোর মতো শিশু, যাদের বেশিরভাগই গরমজনিত রোগে আক্রান্ত।

বহির্বিভাগেও দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন। রোগীদের মধ্যে অনেকেই ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি, মাথা ঘোরা বা পানিশূন্যতায় ভুগছেন। অনেকে ভর্তি না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আসমানখালী গ্রাম থেকে আসা অভিভাবক হুসেন আলী জানান, গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরম পড়ছে। বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ায় সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। চিকিৎসকের পরামর্শে ভর্তি রেখেছি। এখানেও প্রচণ্ড গরম।

সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহানাজ বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ওয়ার্ডে সবসময়ই ৫০ জনের বেশি রোগী থাকে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে আড়াইশো শয্যার হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ রোগী ভর্তি থাকেন। জনবল ও সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে কিছু পরামর্শ দিয়ে ডা. বিদ্যুৎ কুমার বলেন, এই সময় বিশ্রামে থাকতে হবে। রোদ-গরম এড়িয়ে চলতে হবে। বাইরের কোনো খাবার খাওয়া উচিত নয়, বরং ঘরের তৈরি খাবার খেতে হবে। বাসি খাবার পরিহার করতে হবে। বেশি করে পানি ও ফলমূল খেতে হবে। ফলের শরবত পান করলে শরীর ঠান্ডা থাকবে। তবে হঠাৎ ঠান্ডা শরবত বা পানি পান না করে ধীরে ধীরে খাওয়া উচিত।

মন্তব্য করুন